সবার কাছে প্রয়োজনীয় একটি সম্পদ হচ্ছে জমি। আপনার জমি নেই বা অনেক জমি রয়েছে তবুও জমি ক্রয় করার আগ্রহ আপনার আছে। তাই আজকের আলোচনা হবে জমির মালিকানা বের করার উপায়: খতিয়ান বের করার নিয়ম ও অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই।
বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি সেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ফলে যে কেউ এখন অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করা কিংবা মোবাইলেই জমির খতিয়ান বের করে নিতে পারবে।
জমির খতিয়ান বা পর্চা কি?
খতিয়ান বা পর্চা একই জিনিস। জমির মালিকানা প্রমাণের সরকারি যে দলিল তাকে খতিয়ান বলে। বিভিন্ন এলাকায় এটাকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।
খতিয়ানের প্রকারভেদ
আমাদের দেশে এ যাবৎ তিনটি জরিপ হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী জমির খতিয়ান বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন-
সিএস খতিয়ান
এসএ খতিয়ান
আরএস খতিয়ান
বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ
এখানে উল্লেখ্য যে, বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ আর এস খতিয়ানের অন্তভুক্ত সেই হিসাবে খতিয়ান তিন প্রকার।
সিএস খতিয়ান। (Cadastral Survey)
এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম যে জরিপ হয় সেটাই হচ্ছে সিএস খতিয়ান (Cadastral Survey)। এই জরিপ ১৮৮৭ সালে শুরু হয়ে ১৯৪০ সালে শেষ হয়।
এই জরিপ কক্সবাজারের রামুতে শুরু হয় এবং দিনাজপুরে শেষ হয়। জরিপ চলাকালে সিলেট আসাম প্রদেশ এর সাথে সংযুক্ত এবং পার্বত্য চট্রগ্রাম জমিদারি প্রথার সাথে বাঙ্গালীদের বিরোধ থাকায় এই দুটি অঞ্চল সিএস জরিপের আওতায় আনা হয় নাই।
সুতরাং সিএস জরিপ হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম জরিপ এবং এর খতিয়ানকে সিএস খতিয়ান বলা হয়।
এই খতিয়ান উপর থেকে নিচ লম্বালম্বিভাবে হয়। একদম উপরে বাংলাদেশ ফরম নং ৫৪৬৩ লিখা থাকে।
এসএ খতিয়ান । (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালে জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হয়। আইন পাশের পর ততকালিন সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ সাবস্ত করেন।
এই সময় সরকারি আমিনগণ সরেজমিন অর্থাৎ মাঠে না গিয়ে অফিসে বসে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে খতিয়ান তৈরি করেন। এটাকে এসএ খতিয়ান বলে। কোন কোন অঞ্চলে এ খতিয়ানকে টেবিল খতিয়ান বা ৬২ খতিয়ান বলা হয়।
সরেজমিন না গিয়ে জরিপ পরিচালনা করা হয় বলে এ খতিয়ানে অনেক ধরণের অসমতা দেখা দেয়।
এ খতিয়ান সাধারণত এক পৃষ্ঠায় হয়ে থাকে এক কখন প্রিন্ট হয় না অর্থাৎ হাতে লেখা খতিয়ান হচ্ছে এসএ খতিয়ান।
আরএস খতিয়ান। (Revisional Survey)
সিএস খতিয়ান সম্পন্ন হওয়ার ৫০ বছর অতিক্রম করে আরিএস জরিপ শুরু হয়। আগের খতিয়ানের ভুল সংশোধন করে এতটাই স্বচ্ছ করা হয় যে, মালিকানা, দখলদার বিরোধ কিংবা ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে এটির উপর নির্ভর করতে হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই জরিপ পরিচালনা করা হয় বলে এর খতিয়ানকে বাংলাদে খতিয়ানও বলা হয়।
আরএস খতিয়ান সিএস খতিয়ানের মত লম্বালম্বি দাগ টানা থাকে তবে এটি এক পৃষ্ঠায় হয়। ফরমের একদম উপরে হাতের ডান পাশে ‘রেসার্তে নং’ লেখা থাকে।
বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ। (City Survey)
বাংলাদেশে সর্বশেষ যে জরিপ (1998-1999 সালে) অনুষ্ঠিত হয় যেটার কাজ এখন চলমান রয়েছে। টাকা অঞ্চলে এটা মহানগর জরিপ হিসাবে পরিচিত লাভ করে।
বি এস খতিয়ানে ৯ টা কলাম থাকে এবং জমির ধরণ কি তা উল্লেখ থাকে। যেমন- চাষের জমি, পুকুর ইত্যাদি।
জমির মালিকানা বের করার প্রয়োজন হয় কেন?
জমি ক্রয় করার আগে ক্রয়কারিকে অবশ্যই মালিকানা যাচাই করে নিতে হয়। কেননা বাংলাদেশে প্রতারকের অভাব নেই। নকল মালিক সেজেও জমি বিক্রয় করার প্রতারণা করতে পারে অনেকেই।
এছাড়াও জমি জমা নিয়ে বিরোধ মিমাংসা করার ক্ষেত্রেও জমির মালিকানা যাচাই করার প্রয়োজন হয়।
ওয়ারিশদের প্রাপ্ত সম্পত্তি বন্টন করার আগেও মৃত ব্যক্তির মালিকানা যাচাই করার প্রয়োজন হতে পারে। কেননা অন্য কারো জমি দাপুটে ভোগদখল করার নজির আমাদের দেশে আছে।
জমির মালিকানা যাচাই করার নিয়ম
বর্তমানে আপনি দুইভাবে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন। যেমন - এক. কোন খতিয়ান সম্পর্কে যদি আপনার সন্দেহ হয় তাহলে খতিয়ানটি নিয়ে সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে খতিয়ানের ভলিয়াম দেখুন।
আপনার খতিয়ান ভলিয়মের সাথে মিল থাকলে খতিয়ানটি সঠিক নচেৎ জালিয়াতি করা হয়েছে।
অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই ও খতিয়ান বের করার নিয়ম
ডিজিটাল এই যুগে ভূমি সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে কোথাও না গিয়ে নিজে নিজে বাসায় বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জমির মালিকানা যাচাই করাসহ যে কোন খতিয়ান বের করা যায় খুব সহজেই।
#খতিয়ান #পর্চা #খতিয়ানযাচাই
-Contact Information-
Phone No- 01671-043256
Email- lemon.law14@gmail.com
Face book Page Link- [ Ссылка ]
Instagram Link- [ Ссылка ]
Twitter Link- [ Ссылка ]
Ещё видео!