Chandraketugarh travel guide.
চন্দ্রকেতুগড়ের অবস্থান -
বাংলার এই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থলটি কলকাতা শহর থেকে ৩৫কিমি উত্তর পূর্বে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বেড়াচাঁপা অঞ্চলে অবস্থিত।
একদা ভাগীরথী নদীর শাখানদী বিদ্যাধরী নদীর তীরবর্তী স্থানে চন্দ্রকেতুগড় নামক নগরীটি গড়ে ওঠে ।
চন্দ্রকেতুগড়ের ইতিহাস -
বাংলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীন এই নগরী চন্দ্রকেতুগড় একসময় বন্দরনগরী হিসেবে পরিচিত ছিল।
এই নগরীর উৎপত্তির সময়কাল খ্রীস্টপূর্ব ৩০০ শ শতক অর্থাৎ প্রাক মৌর্য যুগ সময়ে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, মৌর্য যুগ থেকে কুষান যুগ পরবর্তীকালে গুপ্ত যুগ থেকে পাল -সেন যুগে রাজাদের শাসনকালেও চন্দ্রকেতুগড় সমৃদ্ধ ছিল।
পাল - সেন সাম্রাজ্যের পরই এখানে সভ্যতার অবলুপ্তি ঘটে। এই স্থানটিতে খনন কার্যের পর এখানে একসময় বিশাল দুর্গ বা কেল্লার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এছাড়াও জানা যায়,
শিল্পকার্য এবং বাণিজ্যর সাহায্যেই এই নগরীর অধিবাসীরা জীবিকানির্বাহ করতেন। খননকার্য থেকে খরষ্ঠী এবং ব্রাহ্মী শিলালিপি, কিছু টেরাকোটা শিল্পকার্য, ধাতব জিনিসপত্র, স্বর্ণ এবং রৌপ্য মুদ্রা উদ্ধার করা হয় ।
কেন এই নগরীর নাম চন্দ্রকেতুগড় -
মধ্যযুগের স্থানীয় রাজা চন্দ্রকেতুর নাম অনুসারেই এই নগরী চন্দ্রকেতুগড় নামে পরিচিত। রাজার শাসন কালে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব থেকে পীর গোড়াচাঁদের আগমন ঘটে।
লোককথা অনুসারে পীর গোড়াচাঁদ হিন্দু রাজা চন্দ্রকেতুকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু রাজা প্রত্যাখ্যান করায় পীরবাবা তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হন এবং এই পীর নানান অলৌকিক ক্ষমতার প্রদর্শন করে রাজার ধর্ম পরিবর্তনের চেষ্টা করেন।
উদাহরণস্বরূপ রাজপ্রাসাদের চারিদিকে লোহার বেড়ায় চাঁপাফুল ফোটান। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি এই ঘটনাকে ভিত্তি করেই এই স্থানটি বেড়াচাঁপা নামে পরিচিতি পায়।
পীরবাবার এই অলৌকিক শক্তির কথা জেনেও রাজা হার স্বীকার করেন না এবং এর কিছুদিন পরে রাজা এবং পীরবাবার যুদ্ধে রাজা পরাজিত হন।
এই খনন স্থান সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য -
১৯০৬ সালের চিকিৎসক তারকানাথ ঘোষ আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কাছে এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিশদে জানিয়ে আবেদন জানান।
কিন্তু তৎকালীন প্রত্নতত্ববিদরা এই স্থানের গুরুত্ব আবিষ্কার করতে ব্যার্থ হন। এরপর ১৯০৯ সালে বিখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় প্রথম চন্দ্রকেতুগড়-এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিশদে আবিষ্কার করেন এবং সেই সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেন।
১৯৫৬-৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আশুতোষ সংগ্রহশালা থেকে এই অঞ্চলে খনন কার্যের ফলে খ্রীস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে দ্বাদশ শতকের অনেক নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়।
দর্শনীয় স্থান -
খনা -মিহিরের ঢিবি -
চন্দ্রকেতুগড়ের প্রধান দর্শনীয় স্থান হলো খনা -মিহিরের ঢিবি। এই প্রত্নস্থলটি আনুমানিক ৪০০- ৮০০ খ্রিস্টপূর্বে নির্মাণ করা হয়। আপাতদৃষ্টিতে চুন সুড়কির গাথুনি দেওয়া পাঁচিলের ধ্বংসস্তূপ মনে হলেও,
লোককথা অনুসারে জানা যায় মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের কবি এবং প্রখ্যাত জ্যোতিষী খনা (যিনি লীলাবতী নামেও পরিচিত)এবং বিক্রমাদিত্য-এর নবরত্ন সভার বিখ্যাত গণিতবিদ বরাহ-পুত্র মিহির বিবাহের পর এই চন্দ্রকেতুগড়ের বসবাস করতেন।
খনা এবং মিহির দুজনেই জ্যোতিষ বিদ্যায় বেশ পারদর্শী ছিলেন। কথিত আছে একদিন বরাহ এবং মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়লে খনা সেই সমস্যার সমাধান করেন। খনার এই গণনার পূর্বাভাসের দ্বারা রাজ্যের কৃষকগণ উপকৃত হন।
এই ঘটনাটি রাজা বিক্রমাদিত্য-এর নজরবন্দি হয় এবং তিনি খনাকে তাঁর রাজসভার দশম রত্নের আখ্যায় ভূষিত করেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজসভার প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে বরাহ তাঁর পুত্র মিহিরকে খনার জিহবা কেটে ফেলার আদেশ দেন এবং
পিতার আদেশ রক্ষার্থে মিহির তাঁর স্ত্রীর জিভ কেটে দেন। এর কিছুদিন পরই খনার মৃত্যু হয়। বাংলা লোকসংস্কৃতিতে আজও 'খনার বচন' প্রচলিত রয়েছে।
মূলত উৎখনন কার্যের ফলেই ঢিবির সন্ধান পাওয়া যায়। এই ঢিবিতে একটি উত্তরমুখী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। কথিত আছে এই মন্দিরে বসেই খনা এবং মিহির জোতিষবিদ্যা চর্চা করতেন। ঐতিহাসিকদের মতে এই মন্দিরটি বাংলার প্রাচীনতম মন্দিরের একটি দৃষ্টান্ত।
চন্দ্রকেতু দুর্গ -
খনা মিহিরের ঢিবি থেকে মাত্র ২কিমি দূরে একসময় অবস্থিত ছিল রাজা চন্দ্রকেতুর দুর্গ । এই দুর্গেই রাজার প্রিয় পাত্র হামা এবং দামা যুদ্ধ অনুশীলন করতেন । এই দুর্গের পাশ দিয়েই একসময় প্রবাহিত হত বিদ্যাধরী নদী ।
তবে বর্তমানে এখানে একটি পুরাতন গেট ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই । আর যে স্থানে বিদ্যাধরী নদী প্রবাহিত হত সেই স্থানটি এখন উর্বর চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে ।
চন্দ্রকেতুগড় সংগ্রহশালা -
সাম্প্রতিক কালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসরকারের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে চন্দ্রকেতুগড় সংগ্রহশালা। এই সংগ্রহশালায় ২৫০০ বছরের পুরাতন স্থাপত্য এবং ভাস্কর্য সংরক্ষিত আছে ।
খনন কার্যের ফলে যে সমস্ত নিদর্শন গুলি পাওয়া গেছে, যেমন বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, মাটির পাত্র,বৌদ্ধ মূর্তি, তামা রুপোর মুদ্রা ইত্যাদি এই সংগ্রহশালায় রয়েছে ।
Khana-Mihirer Dhipi
[ Ссылка ]
Chandraketugarh Museum
[ Ссылка ]
Chandraketu's Fort
[ Ссылка ]
Harua Road railway station
[ Ссылка ]
Follow me on Facebook
[ Ссылка ]
Follow me on instagram
[ Ссылка ]
Subscribe my YouTube channel.
[ Ссылка ]
My Email id - exploreravirup@gmail.com
Voice over - Avirup Biswas
Cinematography - Avirup Biswas
Edit & vfx - Avirup Biswas
info source - ([ Ссылка ])
Ещё видео!