মাল্টা গাছের পাতা হলুদ হয়ে মারা গেলে বুঝতে হবে মাল্টা গাছের গ্রিনিং রোগ হয়েছে। এই রোগ হলে গাছের পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রং ধারণ করে। পাতার শিরা-উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, ও পাতা কুঁকড়িয়ে ডাই-ব্যাক রোগের এর সৃষ্টি করে।
সাইলিড পোকা দ্বারা এই রোগ বিস্তার লাভ করে থাকে। এই পোকা সাইট্রাস গ্রিনিং ভাইরাস বহন করে।
গ্রিনিং রোগ : এ রোগে পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রঙ ধারণ করে। শিরা উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, শিরা দুর্বল ও পাতা কুঁকড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাইলিড পোকা এর বাহক। তাই পোকা দমন (ব্যবস্থাপনা আগে দেয়া আছে) করতে হবে। আক্রান্ত হলে অন্য গাছে রোগ যেন না ছড়ায় সেজন্য গাছ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
পানি কম /বেশি হলে
গাছে প্রয়োজনের বেশি বা কম পানি দিলে গাছের পাতা হলুদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি গাছে কম পানি দেয়া হয় তাহলে পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাবে।
গাছে নিয়মিত পানি ্দিন
আবার গাছে মাত্রাতিরিক্ত পানি দিলে পাতা একটু ঘষলেই স্যাতসেতে ভাব বুঝা যাবে। তাই গাছে পানি দেয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা দরকার যেন গাছে পানির পরিমাণ কম বা বেশি না হয়। তাতে করে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সবসময় গাছের মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে মাটি শুকনা নাকি ভেজা।
সার কম /বেশি হলে
আমরা সবাইই কমবেশি রাসায়নিক সার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অনেকেই জানি না কোন সার কি পরিমাণে কখন ব্যবহার করা উচিত। তাই এইসব রাসায়নিক সার মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পাতা হলুদ হয়ে জ্বলে যাবে। এই অবস্থায় তাই প্রচুর পানি ব্যবহার করা লাগবে যাতে পানিতে এই রাসায়নিক সার ধুয়ে যায়। তাহলে গাছটা বাঁচানো সম্ভব হবে।
NPK মিশ্র সার
আবার সার কম হলে পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে যাবে। এর জন্য গাছ লাগানোর সময় প্রয়োজন মত NPK সার ব্যবহার করতে হবে।
মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে
মাটিতে অক্সিজেনের ঘাটতি হলেও গাছের পাতা হলুদ হতে পারে। তখন গাছের টবের মাটিতে দুই পাশে ২/৩ টি পেরেক পুতে দিতে হবে। পেরেক যেহেতু লোহা দিয়ে তৈরি তাই লোহায় মরিচা ধরার জন্য বাতাসের অক্সিজেন দরকার। মরিচা প্রধানত ফেরিক অক্সাইড তাই এই মরিচা তৈরি হলে তখন মাটিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে।
পটাশিয়ামের অভাবে
অনেক সময় দেখা যায় গাছের উপরের দিকের পাতা সবুজ থাকলেও নিচের দিকের পাতা হলুদ হয়ে যায়। অথবা গাছের পাতার চারিপাশ হলুদ কিন্তু মাঝের দিকটা সবুজ।
NPK সার
এই রকম অবস্থা হলে বুঝতে হবে গাছে পটাশিয়ামের অভাব হয়েছে। এই অবস্থায় কলার খোসা রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ড করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে। অথবা গাছের মাটিতে এক চিমটি পটাশিয়াম সার ব্যবহার করতে হবে।
গাছ নতুন টবে বসানোর সময় কম্পোষ্ট সার না দেওয়া
নতুন গাছের চারা লাগানোর সমইয় যে মাটি তৈরি করা হয় তখন ভার্মিকম্পোস্ট বা গোবর সার না দিলেও গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। আর প্রতি ২ থেকে ৩ মাস পর পর গাছে এসব কম্পোস্ট সার দিয়ে মাটি খুচিয়ে দিতে হবে। এতে গাছ প্রয়োজন মত নিয়মিত খাদ্য পাবে।
পোকামাকড় আক্রমণ করলে
অনেক সময় পোকামাকড় আক্রমণ করলে পাতা হলুদ হতে দেখা যায়। এর জন্য প্রয়োজন মত পোকা নিধনের ব্যবস্থা নিতে হবে। সুবিধামত পেস্টিসাইড স্প্রে করে দিতে হবে।
ক্লোরফিলের অভাবে
সম্পূর্ণভাবে পরিচর্যা করার পরো গাছের পাতা হলুদ হতে পারে। তখন বুঝতে হবে গাছের পাতায় ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হয়েছে ফলে ক্লোরফিলের ঘাটতি দেখা যায়। যার ফলে গাছের পাতা হলুদাভ দেখা যায় ( পুরো ফ্যাকাসে হয়ে যায় )। এরকম সমস্যা হলে গাছ পর্যাপ্ত খাদ্য তৈরি করতে পারে না ফলে গাছে ফুল ফল সময়মতো আসতে বিঘ্ন দেখা দেয়।
তাই এই অবস্থায় গাছে ইপসম সল্ট ( যা বাজারে ম্যাগ সল্ট নামেও পরিচিত ) ব্যবহার করতে হবে। ইপসম সল্ট ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি যা ১ লিটার পানিতে ১ থেকে ২ গ্রাম মিশিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন পর পর গাছের পাতায় স্প্রে করতে হবে।
ঋতু পরিবর্তন হলে
অনেক সময় ঋতু পরিবর্তন হলে যেমন গরম থেকে ঠান্ডা বা ঠান্ডা থেকে গরম অথবা বর্ষাকালেও গাছের পাতা হলুদ হতে দেখা যায়। এগুলো স্বাভাবিক ঘটনা। এই সময়গুলোতে গাছের পাতা হলুদ হয়ে পরে যেতে পারে যা প্রাকৃতিক ঘটনা। কিন্তু পাতা বেশি দিন ধরে হলুদ থাকলে বা ঝরে পড়লে অবশ্যই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
এই দুর্দান্ত টিপসগুলো এখনই কাজে লাগাতে পারেন আপনার শখের ছাদবাগানে।©
Ещё видео!