ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ ব্লকের লালবাগ মহকুমার ছোট্ট একটি গ্রাম বড়নগর যা ২০২৪ সালে ভারতের সেরা সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বছর তিনেক আগে একদিন হাজির হয়েছিলাম বড়নগর গ্রামের মূল আকর্ষণ রানি ভবানীর চার বাংলা মন্দির দেখতে। অবাক বিস্ময়ে সেদিন তাকিয়ে দেখেছিলাম অষ্টাদশ শতকে নির্মিত অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানী ভবানীর অসাধারণ সব স্থপাত্যকির্তী ও মন্দির গায়ে থাকা টেরাকোটার অপূর্ব শিল্প নিদর্শন। তবুও যেন মন ভরলো না। ইতিহাসের ক্ষিদেটা কেমন যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। সেকালের বঙ্গের বারাণসী মুর্শিদাবাদের বড়নগরের মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেই মুহুর্তে মন ছুটে গিয়েছিল বাংলাদেশের রাজশাহীতে অবস্থিত নাটোর রাজবাড়িতে। সেদিনই ঠিক করেছিলাম একদিন রানীভবানীর রাজত্ব নাটোর ঘুরে আসবো। হ্যাঁ বন্ধুরা অবশেষে আমি পৌঁছে গেলাম নাটোর। ইতিহাস-ঐতিহ্যের শহর নাটোর। নবাবি আমলে গড়ে ওঠা নাটোর রাজ্যের মহারানী ছিলেন অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানী ভবানী। তিনি ছিলেন নাটোর রাজবংশের উজ্জ্বলতম চরিত্র। রানী ভবানী রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম ও মালদহ জেলা শাসন করতেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্বের জন্যই রানী ভবানীর স্মৃতি বাংলার মানুষের কাছে এখনও উজ্জ্বল। অতি দয়ালু রানি ভবানীর রাজবংশের কেউ এখানে না থাকলেও তাদের অনেক স্থাপত্য রয়েছে। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক এখানে দেখতে আসেন রানী ভবানীর বাড়ি। নাটোর রাজবাড়িখ্যাত এ বাড়িটি ঘুরে ঘুরে দেখার পাশাপাশি রানী ভবানীর বর্ণাঢ্য ইতিহাস জেনে মুগ্ধ হন পর্যটকরা। অর্ধবঙ্গেশ্বরীখ্যাত রানী ভবানীর এ রাজবাড়িটি ১৭০৬ সাল থেকে ১৭১০ সালের মধ্যে রাজা রামজীবন স্থাপন করেন। ১৭৩৪ সালে রাজা রামজীবন মারা যাওয়ার পর তার দত্তক নেওয়া ছেলে রামকান্ত নাটোরের রাজা হন। ১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রানী ভবানীর ওপর রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন নবাব আলীবর্দী খাঁ। রানী ভবানী দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি পায়। তার আওতায় ছিল রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম ও মালদহ জেলা। ১৮০২ সালে রানী ভবানীর মৃত্যুর পর তার দত্তক ছেলে রামকৃষ্ণ রাজ্যভার গ্রহণ করেন। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিশাল এ জমিদারি তার দুই ছেলে বিশ্বনাথ ও শিবনাথ রায়ের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে বড় তরফ ও ছোট তরফ নামে দুটি আলাদা জমিদারির উত্থান ঘটে। ছোট ছেলে শিবনাথের অংশের নাম হয় ছোট তরফ। নাটোর রাজবংশের ছোট তরফের শেষ রাজা ছিলেন বীরেন্দ্রনাথ। তিনি ১৮৯৭ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত এই ছোট তরফের জমিদার ছিলেন। অবিভক্ত বাংলার মোট আয়তন ছিল ৭৭ হাজার ৫২১ বর্গমাইল। এর মধ্যে রানী ভবানীর রাজ্য ছিল ১২ হাজার ৯৯৯ বর্গমাইল। তবে দুই বাংলার বড় অংশ তিনি শাসন করতেন। রানী ভবানী দানশীল ছিলেন বলে দাবি করে এ ইতিহাস গবেষক বলেন, তিনি তার রাজ্যে প্রজাদের মধ্যে এক লাখ বিঘা জমি বিনা খাজনায় দান করেছেন। রানী ভবানীর স্মৃতিবিজড়িত মূল ভবনটিই ‘রানী ভবানীর রাজবাড়ি’ অর্থাৎ ঐতিহ্যবাহী নাটোর রাজবাড়ি। রানী ভবানীর মূল ভবনটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও বড় তরফ ও ছোট তরফ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
Join this channel to get access to perks:
[ Ссылка ]
বন্ধুরা , যদি ভিডিও ভালো লাগে তাহলে লাইক কমেন্ট, সেয়ার ও সাবস্ক্রাইব করে চ্যানলের সঙ্গে থাকবেন এই আশা রাখি ।
ব্যক্তিগত মতামত ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য নিচের মেইল আইডি তে মেইল করুন। manasbangla9@gmail.com
Stay Connected with me on Social Network :
Twitter : [ Ссылка ]
Facebook : [ Ссылка ]
Instagram :[ Ссылка ]
Ещё видео!