বাসর ঘরে বিড়াল মারা’ এই কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়? এই বাক্যঅংশটি চালু হওয়ার পিছনে ইতিহাস কী?
আসলে মূলত বাঙালি সহজ একটি জিনিসকে অকারণে জটিল করে ফ্যালে। বেড়াল মারা মানে, বেড়াল (cat) ধরে এনে হত্যা করতে হবে না। বেড়াল মারা মানে, নিজের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা। এ বিষয়ে একটা গল্প প্রচলিত আছে।
দুই বন্ধু খুব গরীব। পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। ঠিকভাবে খেতেও পায় না। কি করবে, বুঝতে পারছে না। এমন সময়ে একটি ঘোষণা শুনতে পেলো। রাজার দুই মেয়ে নিজের জন্য এমন বর চাচ্ছে, যারা প্রতিরাতে ১০ বার চাবুকের আঘাত নিতে রাজী আছে। রাজার মেয়েদের এই অদ্ভূত দাবী শুনে, কেউই তাতে রাজী হয়নি। তবে, এই দুই গরীব বন্ধু রাজী হলো।
বিয়ের পরে, দুই এক সপ্তাহ বেশ ব্যস্ত কাটলো। এর পরে দুই বন্ধু সুখ-দুঃখের আলাপ করেছে। প্রতিরাতে কখন চাবুক মারে, জোরে মারে কিনা, এসব ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো। এই প্রশ্ন শুনে অপর বন্ধু বলল - আমারে তো চাবুক মারে না। অবাক হয়ে, বন্ধু কারণ জানতে চাইলো।
তখন সেই বন্ধু বলেছে - প্রথম রাতে খাবার টেবিলের পাশে একটি বেড়াল ঘোরাফেরা করতে দেখেছি। হঠাৎ বেড়ালটি আমার প্লেটের পাশে চলে এলো। আমি তলোয়ার বের করে, এক কোপে বেড়ালটি মেরে ফেললাম। এটা দেখে হয়তো ভয় পেয়েছে। আমারে চাবুক মারে না।
এই ঘটনা শুনে আরেক বন্ধু মনে মনে ভাবছে, প্রতিদিন বেড়াল আসে, আজকে বেড়ালকে মারতে হবে। রাতে খাবার টেবিলে, বন্ধুর পরামর্শ মতন, সেও আরেকটি বেড়াল মেরে ফেললো। এটা দেখে তার বউ রেগে অস্থির - তুমি আমার বেড়াল মারলে কেন? আজকে থেকে তোমাকে ১৫ বার চাবুক মারা হবে।
চাবুক মারা বেড়ে যাওয়াতে, সে বন্ধুর কাছে গিয়ে বলেছে - তোমার পরামর্শ মতন বেড়াল মেরে, চাবুক তো বেড়ে গেল !! তখন বন্ধু উত্তর দিলো - প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে হয় (পরে মারলে কাজ হয় না)।
এটা একটি রূপকথা হলেও, এর শিক্ষা বাস্তব জীবনে খুব কার্যকর। বেশিরভাগ পুরুষ একটি ভুল করে - তারা মনে করে, নতুন বউ, ধীরে ধীরে শিখে যাবে। আসলে, বউ কোনদিনই শিখবে না। বউকে প্রথমেই শেখাতে হবে, পরে শেখে না। কি শেখাবেন? বউ নতুন থাকতেই আপনার পছন্দ-অপছন্দ তাকে শিখিয়ে দিন। পরে কোনদিনই শেখানো যায় না। প্রথমেই শেখান। এটাই আসলে বেড়াল মারা - নিজের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত করা।
Ещё видео!