মূলত ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এই রীতি চলে আসছে। অবাঙালিদের কাছে রাখি বন্ধন রক্ষা বন্ধন নামেও পরিচিত। কিন্তু বাঙালিদের কাছে রাখি কেবলই ভাই বোনের মধ্যে আবদ্ধ নয়। এছাড়া ধর্মীয় ও সামাজিক গণ্ডি পেরিয়ে রাখিকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও জায়গা দিয়েছে বাঙালিই। আর বাঙালির এই রাখি বন্ধনের প্রসঙ্গে উঠে আসবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। রাখিকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বঙ্গভঙ্গের কথা ঘোষণা করে। সেই সময়ে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় মানুষ সামিল হয়। ঠিক হয়, ওই দিন বাংলার মানুষ পরস্পরের হাতে বেঁধে দেবেন হলুদ সূতো বাঁধবেন। এই দিনকে মিলন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কবিগুরু এই দিনটিকে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করার ডাক দেন। বাংলায় হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বকে ফুটিয়ে তুলতেই এই উদ্যোগ নেন রবীন্দ্রনাথ।শুধু বোনেরা ভাইদের নয়, এই দিন প্রত্যেক মানুষের মধ্যের একতাই ছিল রাখি বন্ধনের মূল বিষয়। এই রাখিবন্ধন উৎসবে সম্প্রীতি যে ভাবে জায়গা করে নিয়েছিল, তা আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক। রবীন্দ্রনাথ এই রাখি বন্ধন উৎসব নিয়েই গান লিখেছিলেন, বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল। পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, হে ভগবান। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ৩০ আশ্বিন রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়। তবে এই রাখির সঙ্গে শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার রাখির কোনও সম্পর্ক নেই। এই রাখির মূল উদ্দেশ্যই ছিল মানবিকতা, সম্প্রীতি ও একতা। যে কবি মানবিকতার নজীর সৃষ্টি করে রাখি বন্ধন উৎসবের সূচনা করেন, তিনি স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও অবহেলায় পড়ে রইলেন । কারো দৃষ্টি পড়লনা রবীন্দ্রনাথের আবহ মুর্তির দিকে ।অথচ তার সৃষ্টি উৎসব পালন করতে ব্যাস্ত সকলেই ।যেমন রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাস্ত রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য । অপরদিকে প্রেমিক প্রেমিকা ব্যাস্ত প্রেম নিবেদনে । তাসত্ত্বেও মানবিকতার ছবি দেখে মুগ্ধ হতে হয় , যখন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক আশিষ কুমার বিশ্বাস বোনদের নিয়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে গেদে ক্যাম্পে হাজির হয়ে বিএসএফ জওয়ানদের রাখি পরিয়ে ভাইদের মঙ্গল কামনা করে । বিএসএফের জোয়ানরা বাড়ি থেকে দুরে থেকেও বোনের অভাব বুঝতে পারলো না বলে আনন্দে মেতে ওঠেন রাখিবন্ধনে নতুন বোন পেয়ে । এছাড়াও চাপড়া ব্লকের বঙ্গজননী বাহিনীর পক্ষ থেকেও গেদেই বিএসএফ জওয়ানদের রাখি পড়ানো হয়
Ещё видео!