বাঘাইর মাছ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে বিপাকে বিক্রেতা | বাজারে অভিযান |দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন না বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন কী? এই আইনের আওতায় কোনো কোনো বন্যপ্রাণীকে নিরাপত্তা দিয়ে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।
যেখানে যে অবস্থাতেই সেই প্রাণীটি থাকুক না কেন তাকে তার ওই পরিবেশ থেকে ধরা, বিক্রি করা, পালন করা কিংবা হত্যা করে এর শরীরের বিভিন্ন অংশ বিক্রি করা দেশের প্রচলিত আইনের চোখে দণ্ডনীয় অপরাধ।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্তৃক বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ ব্যাপকভাবে প্রচারিত না হওয়ায় সর্বসাধারণেরা এই আইনে অন্তর্ভুক্ত বিশেষ বিশেষ প্রজাতিগুলোকে তাদের আবাসস্থল থেকে ধরে এবং কেনাবেচার অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। মাছের পুরো শরীর কেটে কেটে কেজি প্রতি ৭০০/৮০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
যা দেশের প্রচলিত আইনের পুরোপুরি অপরাধ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধু এবারই নয়, এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল কুশিয়ারা নদী থেকে শিকার করা ৬০ কেজি ওজনের বাঘাইড়, ২৭ মার্চ সুরমা নদী থেকে শিকার করা ১০০ কেজি ওজনের বাঘাইড় ও ১২ জানুয়ারি সুরমা নদী থেকে শিকার করা ১২০ কেজি ওজনের বাঘাইড় এই বাজারে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া এ বাজারে নিয়মিত বিভিন্ন ছোট-মাঝারি আকারের বাঘাইড় মাছ বিক্রি হয়।
বাঘাইড় বা বাঘাইর (Gangetic Goonch) এর বৈজ্ঞানিক নাম Bagarius yarrelli। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) রেড লিস্ট (লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী) অনুযায়ী মিঠা পানির এ মাছটি ‘মহাবিপন্ন’।
এছাড়াও বাঘাইড় মাছ বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ২ নম্বর তফসিলের ‘মৎস্য’ পর্বের ৭ ক্রমিক নম্বর ভুক্ত একটি সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী।
এই আইন অনুযায়ী বাঘাইড় মাছ শিকার, কেনাবেচা, পরিবহন কিংবা দখলে রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে।
বাঘাইড় মাছ বন্ধে কিছুদিন আগে একটি অভিযানে গিয়ে আমরা বুঝেছি যে অভিযান পরিচালনার আগে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাছ শিকারি ও বিক্রেতারা আইনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ কারণে শিগগিরই সচেতনামূলক লিফলেট ও পোস্টার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজন। যাতে তারা এই মহাবিপন্ন বাঘাইড় সম্পর্কে সচেতন হয়ে মাছটিকে প্রকৃতিতে সংরক্ষণে এগিয়ে আসেন।
Ещё видео!