বাঙালির বংশ পদবীর ইতিহাস খুব বেশি প্রাচীন নয়। মধ্যযুগে সামন্তবাদী সমাজ ব্যবস্থার ফলে পরবর্তীতে বৃটিশ আমলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সমান্তরালে বাঙালির পদবীর বিকাশ ঘটেছে বলে মনে করা হয়। পদবির নাম আর #জাতিনাম সমার্থক নয়। কোন একটা পদবি থেকে বোঝা যাবে না ব্যক্তিটি কোন্ জাতিভুক্ত। বাঙালী নামের দুটি অংশ থাকে : একটি #ব্যাক্তিগত_নাম, অপরটি #বংশগত_নাম। দ্বিতীয়টি শেষে বসে এবং তাকে #উপনাম বলা যায়। এই উপনামটি বংশকে চিহ্নিত করে। কিন্তু তার উৎপত্তি নানাভাবে ঘটেছে। কোথাও পূর্বপপুরুষের অতীতের বৃত্তি অনুসারে, কোথাও সরকার প্রদত্ত খেতাব অনুসারে, কোথাও শিক্ষাগত যোগ্যতাসূচক উপাধি অনুসারে। বর্তমানকালে বৃত্তিসুচক উপনাম ব্যক্তি বিশেষের পেশা সূচিত করে না। কারণ অর্থনৈতিক বিন্যাসের পরিবর্তনের কারনে পৈতৃক পেশা সাধারণত উত্তরপুরুষ ত্যাগ করেছে। আবার দেখা যায় একই উপনাম বিভিন্ন ব্যক্তিসূচক জাতির মানুষ ব্যবহার করে। এইভাবে উপনামের জটিলতা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যক্তি বিশেষের নাম থেকে যেমন বংশ পদবীর ব্যবহার হয়েছে, তেমনি পদবী এসেছে বিভিন্ন পেশা থেকেও।
#সরকার, #শিকদার, #দাস, নাকি #চৌধুরী। #शीर्षक_का_इतिहास আপনার #পদবী কি? আপনি কি জানেন আপনায় উপাধির কাহিনী? কেন আপনি আপনার নামের শেষে #তরফদার কিংবা #মজুমদার লেখেন? না জানলে জেনে নিন আমাদের এই ভিডিও থেকে- যদি চ্যানেলটি সবস্ক্রাইব না করে থাকেন, তবে দয়াকরে এখুনি সাবস্ক্রাইব করুন- তবে শুরু করা যাক আমাদের পদবীর ইতিহাস- যদি কারো পদবীর ইতিহাস বাদ পড়ে তবে কমেন্টে জানালে আমরা সাধ্যমত উত্তর দেওয়ার চেষ্ঠা করবো- শিক্ষক, সৈনিক, কারুশিল্পী, বণিক, রাজকর্মচারী, রাষ্টীয় উপাধি ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সামাজিক পদবীর সৃষ্টি হয়েছে এবং নির্বিচারে তার ব্যবহারও হয়েছে। #প্রাচীন_যুগে অর্থাৎ #হিন্দু_আমলে এবং #মধ্যযুগের_মোঘল-পাঠান_শাসনামলে ও আধুনিক কালেও পদবীসমূহ বাঙালি সমাজে প্রচলিত রয়েছে। তবে কিছু পদবী আছে, যা বাঙালি সমাজে শুধু হিন্দুশ্রয়ী, কিছু পদবী একান্তই মুসলমানী, আবার বেশ কিছু পদবী হিন্দু – মুসলমান নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ে ব্যবহৃত হয়। বাঙালির জমি-জমা বিষয় সংক্রান্ত কিছু পদবী যেমন- #হালদার, #মজুমদার, #তালুকদার, #পোদ্দার, #সরদার, #প্রামাণিক, #হাজরা, #হাজারী, #মন্ডল, #মোড়ল, #মল্লিক, #সরকার, #বিশ্বাস ইত্যাদি বংশ পদবী রয়েছে হিন্দু -মুসলমান নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের একান্ত রূপ। বাঙালি মুসলমানের শিক্ষক পেশার পদবী হলো-#খন্দকার, #আকন্দ, #নিয়াজী ইত্যাদি। আবার বাঙালি হিন্দুর শিক্ষক পদবী হচ্ছে #দ্বিবেদী, #ত্রিবেদী, #চর্তুবেদী ইত্যাদি। বেদ, পুরাণ, জাতকের পাতা উল্টালে পদবির হদিস পাওয়া যায় না। সেখানে শুধুই নাম, কোন #পদবি নেই। অন্ত্যনাম থেকে গড়ে ওঠা পদবির মধ্যে যেগুলি #নীহাররঞ্জন_রায়ের_‘বাঙ্গালীর_ইতিহাসে’ উল্লিখিত হয়েছে সেগুলি হল — #দত্ত, #পাল, #মিত্র, #নন্দী, #বর্মণ, #দাস, #ভদ্র, #সেন, #দেব, #ঘোষ, #কুণ্ডু, #পালিত, #নাগ, #চন্দ্র, #দাম (দাঁ), #ভূতি, #বিষ্ণু, #যশ, #শিব, #রুদ্র। #ক্ষিতিমোহন_সেন_তাঁর_‘চিন্ময়_বঙ্গ’ গ্রন্থে লিখেছেন #বসু, #মিত্র, #দত্ত, #দেব, #চন্দ্র, #সেন, #নন্দী, #ধর, #ভদ্র, #শূর, #নাথ এসেছে #জৈনসূত্র থেকে। ব্রাহ্মণ কোন জাতিবাচক নাম নয়, #ব্রাহ্মণ_একটি_বর্ণ। বৈদিক ঐতিহ্যবাহী আর তিনটি বর্ণ হল #ক্ষত্রিয়, #বৈশ্য আর #শূদ্র। এগুলো ছিল মূলত বর্ণভিত্তিক বিভাজন। মধ্যযুগের বাংলায় সেনবংশের প্রতিষ্ঠাতা বল্লালসেন ছিলেন কর্ণাটক থেকে আগত #ব্রহ্মক্ষত্রিয়। বৈশ্যেরা ছিলেন কৃষি ব্যবসা বাণিজ্যে নিযুক্ত জনসমূহ। শূদ্র নাম দেওয়া হয়েছিল বিজিত বা বশ্যতা স্বীকারকারী আর্যেতর জনগোষ্ঠীদের, যাদের জন্য কর্ম নির্দিষ্ট হয়েছিল অন্য তিন উচ্চবর্ণের সেবা। স্বাভাবিক জৈবিক নিয়মেই পারস্পরিক বিবাহমিলনের মাধ্যমে বর্ণসংকরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চবর্ণের পুরুষের সঙ্গে নিম্নতর বর্ণের রমণীর বিবাহকে বলা হত #অনুলোম, এর বিপরীত হল #প্রতিলোম। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণী মাতা আর অব্রাহ্মণ পিতার সন্তানদের #চণ্ডাল নাম দিয়ে সমাজের একেবারে নীচে তাদের স্থান নির্দিষ্ট হয়েছে। ব্রাহ্মণদের আদি বাসস্থান ছিল যেসব গ্রামে সেইসব গ্রামের নাম থেকেই হয়েছে তাঁদের পদবির উৎপত্তি। বাঙালি ব্রাহ্মণদের দুটি প্রধান শ্রেণি — #রাঢ়ী এবং #বারেন্দ্র। রাঢ়ী ব্রাহ্মণদের যেসব পদবি সবচেয়ে পরিচিত সেগুলি হল #চট্টোপাধ্যায়, #বন্দ্যোপাধ্যায়, #মুখোপাধ্যায়, #গঙ্গোপাধ্যায় এবং #ঘোষাল। প্রথম চারটি পরিবর্তিত পদবি। আদি পদবি গ্রাম নাম অনুসারে- চাটুতি গ্রামের ব্রাহ্মণপণ্ডিত বা #উপাধ্যায় (যার অপভ্রংশ #ওঝা) হয়ে উঠেছিল চাটু আর ওঝার সম্মিলনে #চাটুজ্যা, তার থেকে চাটুজ্যে, পরে সংস্কৃতায়নে #চট্টোপাধ্যায় (চট্ট+উপাধ্যায়)। তেমনই বাড়ব গ্রাম থেকে বাড়বি বা বাড়ুরি, পরে #বন্দ্যোপাধ্যায়। মতান্তরে, বন্দ্যঘটি থেকে সরাসরি বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুটি বা মুখুটি গ্রাম নাম থেকে মুখুজ্যে, পরে #মুখোপাধ্যায়। গাঙ্গুর গ্রাম নাম থেকে গাঙ্গুরি, তার থেকে #গাঙ্গুলি এবং পরে #গঙ্গোপাধ্যায়। মতান্তরে, গঙ্গ থেকে সরাসরি গঙ্গোপাধ্যায়। ঘোষাল এসেছে ঘোষ গ্রাম নাম থেকে। তেমনই বারেন্দ্র ব্রাহ্মণদের একশোটি গাঞি পদবির মধ্যে পাঁচটি সুপরিচিত — বাকচি (বাগচি), লাহিড়ি, মৈত্র, ভাদুড়ি আর সান্যাল। এক আতর্থী বাদে অন্যেরা বিলুপ্তপ্রায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষদের পদবি ছিল কুশো গ্রাম থেকে সৃষ্ট কুশারী। পদবিধারীরা এখন আদিবৃত্তি থেকে সরে এলেও তাঁদের পদবি বজায় রেখেছেন। এমনটা ঘটেছে ব্রাহ্মণেতর পদবির ক্ষেত্রেও — #বৈদ্য, #কর্মকার, #উকিল, #গায়েন, #বায়েন, #বণিক, #নাইয়া, #গোপ্পী, #কীর্তনীয়া #শেঠ ইত্যাদি তারই উদাহরণ। গোপ্পী এসেছে গাল্পিক থেকে, গল্প শোনানোই ছিল যাঁদের বৃত্তি বা উপজীবিকা। শেঠ বণিক সম্প্রদায়ের পদবি, এসেছে শ্রেষ্ঠী থেকে। এরই পরিবর্তিত রূপ কর্ণাটকে শেট্টি, তামিলনাড়ুতে চেট্টিয়ার।
Ещё видео!